7th march, 1971 the historical declaration of independence

16/05/2011 00:00


বঙ্গবন্ধুর মার্চের ভাষণ

আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বুঝেন।আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি- আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর যশোরের রাজপথ আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে

আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়-তারা বাঁচতে চায়।তারা অধিকার পেতে চায়।নির্বাচনে আপনারা সম্পূর্ণভাবে আমাকে এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন শাসনতন্ত্র রচনার জন্য। আশা ছিল জাতীয় পরিষদ বসবে, আমরা শাসনতন্ত্র তৈরী করবো এবং এই শাসনতন্ত্রে মানুষ তাদের অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক মুক্তি লাভ করবে। কিন্ত ২৩ বছরের ইতিহাস বাংলার মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। ২৩ বছরের ইতিহাস বাংলার মানুষের মুমুর্ষু আর্তনাদের ইতিহাস, রক্ত দানের করুণ ইতিহাস।নির্যাতিত মানুষের কান্নার ইতিহাস

 ১৯৫২ সালে আমরা রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয় লাভ করেও ক্ষমতায় বসতে পারিনি।১৯৫৮ সালে দেশে সামরিক শাসন জারি করে আইয়ুব খান দশ বছর আমাদের গোলাম করে রাখলো।১৯৬৬ সালে -দফা দেয়া হলো এবং এর পর অপরাধে আমার বহু ভাইকে হত্যা করা হলো।১৯৬৯ সালেগণ-আন্দোলনের মুখে আইয়ুবের পতনের পর ইয়াহিয়া খান এলেন। তিনিবলেলেন, তিনি জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবেন, শাসনতন্ত্র দেবেন,আমরা মেনে নিলাম

তার পরের ঘটনা সকলেই জানেন। ইয়াহিয়া খানের সংগে আলোচনা হলো-আমরা তাকে ১৫ ইং ফেব্রুয়ারী জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকার অনুরোধ করলাম। কিন্তু 'মেজরিটি'পার্টির নেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি আমার কথা শুনলেন না। শুনলেন সংখ্যালঘুদলের ভুট্টো সাহেবের কথা।আমি শুধু বাংলার মেজরিটিপার্টির নেতা নই, সমগ্র পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা। ভুট্টো সাহেব বললেন, মার্চের প্রথম সপ্তাহে অধিবেশন ডাকতে, তিনি মার্চের তারিখে অধিবেশন ডাকলেন আমি বললাম, তবুও আমরা জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যাব এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়া সত্বেও কেউ যদি ন্যায্য কথা বলে আমরা তা মেনে নেব, এমনকি তিনি যদি একজনও ' জনাব ভুট্টো ঢাকা এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা হলো। ভুট্টো সাহেব বলে গেছেন আলোচনার দরজা বন্ধ নয়; আরো আলোচনা হবে।মওলানা নুরানী মুফতি মাহুমুদ সহ পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য পার্লামেন্টারী নেতা এলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা হলো- উদ্দেশ্য ছিলো আলাপ-আলোচনা করে শাসনতন্ত্র রচনা করবো।তবে তাদের আমি জানিয়ে দিয়েছি -দফা পরিবর্তনের কোন অধিকার আমার নেই,এটা জনগণের সম্পদ কিন্তু ভুট্টো হুমকি দিলেন।তিনি বললেন, এখানে এসে'ডবল জিম্মী' হতে পারবেন না। পরিষদ কসাই খানায় পরিণত হবে। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানী সদস্যদের প্রতি হুমকি দিলেন যে, পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিলে রক্তপাত করা হবে, তাদের মাথা ভেঙে দেয়া হবে।হত্যা করা হবে। আন্দোলন শুরু হবে পেশোয়ার থেকে করাচী পর্যন্ত। একটি দোকানও খুলতে দেয়া হবেনা তা সত্বেও পয়ত্রিশজন পশ্চিম পাকিস্তানী সদস্য এলেন।

কিন্ত পয়লা মার্চ ইয়াহিয়া খান পরিষদের অধিবেশন বন্ধ করে দিলেন। দোষ দেয়া হলো, বাংলার মানুষকে, দোষ দেয়া হলো আমাকে, বলা হলো আমার অনমনীয় মনোভাবের জন্যই কিছু হয়নি এরপর বাংলার মানুষ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠলো।আমি শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম চালিয়ে যাবার জন্য হরতাল ডাকলাম। জনগণ আপন ইচ্ছায় পথে নেমে এলো কিন্তু কি পেলাম আমরা? বাংলার নিরস্ত্র জনগণের উপর অস্ত্র ব্যবহার করাহলো। আমাদের হাতে অস্ত্র নেই। কিন্তু আমরা পয়সা